মানবের সদ্ধর্ম (পর্ব- ১)
লিখেছেন- সুলেখা বড়ুয়া
প্রারম্ভিক:
সেই মহামানব তথাগত গৌতম বুদ্ধ
মানবের মঙ্গলের জন্য, কল্যাণের জন্য,
মুক্তির জন্য ও নির্বাণ
লাভের জন্য একটি পথ
বা ধর্ম আবিষ্কার করেছেন,
সে ধর্ম মানবের সদ্ধর্ম।
অর্থাৎ
মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করে,
যে ধর্মাচরণে দুর্লভ মানব জন্মে
মুক্তি লাভ করিতে পারেন।
ধর্ম থেকে সদ্ধর্ম, ধর্ম
শব্দের অর্থ সত্য, যেটা
সম্যকরুপে অনুশীলন করে তাহাই ধর্ম।
ধর্ম প্রধানত তিন প্রকার-
১/ কুশল ধর্ম ( পুণ্য
ধর্ম )
২/ অকুশল ধর্ম ( পাপ
ধর্ম ) এবং
৩/ পরমার্থ ধর্ম ( অব্যাখ্যাত - যা
ব্যাখ্যা করা যায় না
- যেটা নির্বাণের কর্ম )
যে যতটুকু আচরণ করবে,
ঠিক ততটুকুই জ্ঞাত হবে, এবং
সেভাবেই সমৃদ্ধপূর্ণ হবে, অর্থাৎ জলে
যে যতটুকুই নামবে, সে ঠিক
ততটুকুই ভিজবে।
মানুষ
হইলে মানবের সদ্ধর্ম তথা
জন্ম মৃত্যুকে রোধ করিবার ধর্ম
আচরণ করিতে হয়।
আর তাহাই "বিদর্শন ভাবনার" মাধ্যমে নিজেকে সংস্কার মুক্ত
করতে না পারলে পুনঃ
পুনঃ জন্মমৃত্যু সংগঠিত হওয়ার কাজ
হইবে। তাহা
অবিদ্যা।
সুতারাং
পরমার্থ ধর্মই একমাত্র মানবের
সদ্ধর্ম। বর্তমানে
এ সদ্ধর্ম অনুশীলন কিংবা শ্রবণ করিতে
পারা অতি কষ্টসাধ্য।
পাপধর্ম, পুণ্যধর্ম যেখানে সেখানে পাওয়া
যায়। কিন্তু
যে ধর্ম পাপ-পুণ্য
বর্জিত তাহা (পরমার্থ ধর্ম)
অনুশীলন তথা শ্রবণ করিয়া
নির্বাণ লাভ করিতে দুঃসাধ্য
হইয়া পড়ে।
ধর্মের
সত্যতা না জানিলে সত্যিকার
অর্থে বৌদ্ধ হিসেবে পরিগণিত
হলেও অবৌদ্ধ রুপে পরধর্ম
পথিক হয়ে থাকে ।
বেশভূষণে বা চমকপ্রদ আলাপালোচনায়
সদ্ধর্মের ধারক হওয়া যায়
না। শুধুমাত্র
চর্চার মাধ্যমেই তা সম্ভব।
কোন বস্তু বা বিষয়
যদি গবেষণা করিতে হয়
তবে তার গুণাবলী দিয়ে
যাচাই করিলে সত্যিকারের ক্ষেত্রটা
পাওয়া যায়। সেই
গুণাবলীর বাইরে বুদ্ধের ধর্মের
বোঝার কোন ব্যবস্থা নেই।
ধর্মের
গুণ ছয়টি -
১/ স্বাকখাতো ভগবতো ধম্মো
২/ সন্দিটঠিকো ভগবতো ধম্মো
৩/ অকালিকো ভগবতো ধম্মো
৪/ এহিপসসিকো ভগবতো ধম্মো
৫/ ওপনায়িকো ভগবতো ধম্মো
৬/ পচ্চত্তং, বেদিতব্বো, বিঞঞুহি ভগবতো ধম্মো ।
বিঃ দ্রঃ - বিদর্শন ভাবনা
চলাকালীন দেশনার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের
আলোকে এ লেখনী।
চলবে...
0 Comments